সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম !!

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর এবং জনপ্রিয় স্থান সাজেক ভ্যালি।

বাংলাদেশের বৃহত্তম ইউনিয়নটি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত।

যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল।

এ ইউনিয়ন ভারতের ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তবর্তী এলাকা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১৮০০ ফুট।

অবস্থান রাঙ্গামটি জেলায় হলেও খাগড়াছড়ি থেকে এখানে যাতায়াত অনেক সুবিধাজনক।

কারণ খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার।

তাই ভ্রমণপিপাসুরা দীঘিনালা থেকেই সাজেক যেতে বেশি পছন্দ করেন।

সময়-সুযোগ পেলে ঘুরে আসতে পারেন এ নৈসর্গিক উপত্যকায়।

তবে সাজেক প্রকৃতির আসল রূপ

দেখার জন্য সেরা সময় হচ্ছে বর্ষাকালের শেষদিকে এবং শীতকাল।




  

ট্রাভেল করার পূর্বে আপনার প্রস্তুতি কি কি জিনিসপত্র আপনি ভ্রমণের জন্য নিবেন:

1 প্রথমে আপনার মোবাইল এবং মোবাইল সংক্রান্ত চার্জার ইয়ারফোন অন্যান্য জিনিসপত্র।

2.  ক্যামেরা থাকলে ক্যামেরার আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র।

3. জাতীয় পরিচয়  পত্রের ফটোকপি,  অফিস আইডি কার্ড, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, 

বিদেশিদের ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট ইত্যাদি।

4.  আপনি কয়টা পোশাক নিবেন সেগুলো এবং শীতের জন্য আলাদা পোশাক গরমের জন্য আলাদা

পোশাক এবং পাহাড়ে ওঠার জন্য কিছুটা ঢিলেঢালা পোশাক এবং অবশ্যই ছোট খাটো পোশাক নিবেন

5. একটা ব্যাগ নিবেন  এটা পাহাড়ে ওঠা বা ট্রাকিং করার জন্য খুবই উপকারী।

6.  আপনার হাত খরচের টাকা নিবেন এবং শপিং করার জন্য আলাদা কিছু টাকা নিবেন।

7. সমস্ত কিছু নেওয়ার জন্য একটি ট্রলি ব্যবহার করবেন।

8. বৈধ জিনিসপত্র ব্যবহার করবেন এবং

অবৈধ বিষয়গুলো এড়িয়ে চলবেন হোক সেটা খাবার জিনিস

হোক সেটা রিলেশন অথবা অন্যকোন সরঞ্জাম এতে আপনার এবং

আপনার  সাথে ভ্রমণসঙ্গী দের ভ্রমণ আরো আনন্দদায়ক হবে।

9.  এবং যেকোন পরিস্থিতিতে গ্রুপের সবার মতামত নিয়ে ভ্রমণ গাইড এর পরামর্শে

যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন কোন একক অথবা ব্যক্তিগত রাগ চিন্তা বা অভিমান

এখানে গ্রহণযোগ্য বা প্রাধান্য দিবেন না ।


যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

• সঠিক সময়ে এসকোর্ট দেওয়া।

• সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের ছবি তোলা যাবে না।

• স্থানীয় লোকজনের ছবি তোলার আগে অবশ্যই অনুমতি নিয়ে নেবেন।

• ছুটির দিনে কটেজ পাওয়ার ঝামেলা এড়াতে বেশ কয়েক দিন আগে (এক মাস) বুকিং দিন।

• রবি, এয়ারটেল বা টেলিটক সিম সঙ্গে নিন।

• সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র রাখুন।

• সঙ্গে করে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যান।

• জিপের ছাদে বা মোটরসাইকেলে সতর্ক থাকুন।

• দুই-তিন দিনের জন্য সাজেক গেলে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করার দরকার নেই।

• শুধু যাওয়ার জন্যই গাড়ি নিন। আসার সময় অন্য গাড়িতে আসুন।

• দীঘিনালা থেকে ফোন করেও গাড়ি নেওয়া যাবে।


সাজেক ভ্যালি দর্শনীয় স্থানগুলি :খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝরনা, দেবতার পুকুর, হর্টিকালচার পার্ক, তৈদুছড়া ঝরনা,

বিডিআর স্মৃতিসৌধ, মায়াবিনী লেক ও শান্তিপুর অরণ্য কুঠির।

সাজেকের পাশাপাশি এসব জায়গাও ঘুরে দেখতে পারবেন।

কিভাবে সম্পূর্ণ ভ্রমণটি পরিচালনা করবেন :

ঢাকা থেকে সাজেক ভ্যালি দূরত্ব 332 কিলোমিটার ,  ঢাকা থেকে দুইটি পথ ব্যবহার করে

সাজেক ভ্যালি যাওয়া যায় একটি বান্দরবান হয়ে আরেকটি  খাগড়াছড়ি হয়ে যাওয়া যায় তবে

আমি এখানে আপনাদের  পরামর্শ দিব আপনারা খাগড়াছড়ি হয়ে দিঘীনালা পর্যন্ত যাত্রা

টি বেছে নিতে চলুন বিস্তারিত  বর্ণনায় :



খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে  ঢাকার গাবতলী কলাবাগান সায়েদাবাদ আরামবাগ বা যাত্রাবাড়ী থেকে বিভিন্ন

বাস ছেড়ে যায় রাত 7 টা থেকে রাত 11 টার মধ্যে।  তবে রাত  9 টার মধ্যে ছেড়ে যাওয়া বাস গুলোতে 

ভ্রমণ করা আপনাদের জন্য ভালো হবে। কারণ কুমিল্লাতে  গিয়ে রাতের খাবার টা খেতে পারবেন।

ঢাকা থেকে বাস

ছেড়ে চট্টগ্রাম রোড হয়ে কুমিল্লা, ফেনী পার হয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাই হয়ে খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছায়।

এতে সময় লাগে 8 ঘণ্টার মতো।

খাগড়াছড়িতে বাস কাউন্টারের অফিসে ফ্রেশ হবেন এবং চাইলে আশেপাশে 

আধাঘন্টা ঘুরে দেখতে পারেন আর অবশ্যই সকালের নাস্তাটা ওখানেই করে নিতে পারেন

 এরপরে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতে হবে খোলা জিপে, যা চান্দের গাড়ি নামেই পরিচিত।

দুদিনের জন্য ভাড়া করলে আপনাকে গুনতে হবে 7 হাজার থেকে 10 হাজার টাকা।

চান্দের গাড়িতে আসন সংখ্যা 12 টি। সাজেক যেতে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে দীঘিনালা।

দীঘিনালা নেমে আধা ঘণ্টার জন্য ঘুরে আসতে পারেন হাজাছড়া ঝরনা থেকে।

খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালার দূরত্ব 23 কিলোমিটার। দীঘিনালায় একটি সেনানিবাস রয়েছে।

দীঘিনালা থেকে সেনাবাহিনীর এসকোর্ট শুরু হয় সকাল 10 টা থেকে 11 টার মধ্যে।

তাই ওই সময়ের আগেই আপনাকে পৌঁছতে হবে খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালায়।

নইলে একবার সকালের এসকোর্ট মিস করলে আবার এসকোর্ট

পেতে অপেক্ষা করতে হবে বিকেল অবধি।

ওই সময় নিজের অফিস আইডি কার্ড, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড,  ন্যাশনাল আইডি কার্ড অথবা

বিদেশিদের  ভিসা এবং পাসপোর্ট দেখাতে হতে পারে।

দীঘিনালা থেকে প্রথমে যেতে বাগাইহাট, তারপর মাচালং হাট হয়ে সরাসরি পৌঁছে যাবেন সাজেক।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে সাজেক যেতে মোট সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘণ্টার মতো।

আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা ধরে চলা এ ছোট ভ্রমণ সাজেক ট্যুরের অন্যতম আকর্ষণ।

চারদিকে শুধু পাহাড় আর হরিতের সমারোহ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে পথের ক্লান্তি।

এরপরই পৌঁছে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য অর্থাৎ নৈসর্গিক সাজেক ভ্যালিতে।

আপনাদের কাছে একটি অনুরোধ থাকবে পানি ব্যবহারে সাজেকে আপনাকে মিতব্যয়ী হতে হবেন। 

চলুন উপভোগ করি..




সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ এর খরচের বিবরণ:

  1.  নন এসি বাস ভাড়া ঢাকা টু খাগড়াছড়ি 500 থেকে 600 এবং রিটার্ন 1000 থেকে 1200

    1. এসি বাসের ভাড়া 1100 থেকে 1300  টাকার মধ্যে এবং রিটার্ন

    2. ভাড়া বাসা 2200 থেকে 2600 মধ্যে

    3.  চাঁদের গাড়ি ভাড়া 12 সিটের একদিনের জন্য 7000 দুই দিনের জন্য 8 থেকে 10 হাজার

    4. এবং তিন দিনের জন্য 10 থেকে 13 হাজারের মধ্যে

    5.  রুমের ভাড়া পনেরশো থেকে শুরু করে 10 হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান

    6.  কুমিল্লার রাতের খাবার দেশ থেকে 300 টাকা

    7. সকালের নাস্তা 50 থেকে 60 টাকা

    8.  সাজেকের খাবারের প্যাকেজ 200 থেকে 400 টাকার মধ্যে

    9.  বারবিকিউ 400 টাকা থেকে 500 টাকা


কিছু ট্রাভেল এজেন্সি অথবা ট্যুর অপারেটর এর নাম্বার নিম্নে দেওয়া হল
যারা সাজেক ভ্যালির টুর প্যাকেজ আয়োজন করে থাকে:
1. Global Travels
2. Tourism Window
3. Rajdhani Tourism limited
4. Cosmos Holiday
5. TicketNtourism
6. Air Holiday
7. Vision Holiday

সাজেক ভ্যালির কিছু কটেজ হোটেল অথবা রিসোর্ট এর
  যোগাযোগের ঠিকানা এবং নাম্বার নিম্নে দেওয়া হল :

Meghadree eco resort : 01883-697728

Sajek Hill View Resort: 01878-745843

Abakash Eco Cottage Sajek : 01844-172492

Sajek Resort: 01865-347688